চকরিয়া নিউজ ডেস্ক ::
ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্কের খাঁচা ভেঙ্গে বাঘ বেরিয়ে গেছে। পার্কের নিরাপত্তা কর্মীদের ২দিন-রাত চেষ্ঠা করেও বাঘটি এখনো খাঁচার মধ্যে ঢুকাতে পারেনি। তবে বাঘটি ৫০ একর বেষ্টনির মধ্যে থাকলেও চরম নিরাপত্তাহীনতা রয়েছে দেশ-বিদেশ থেকে আসা পর্যটক ও স্থানীয় এলাকাবাসী। পার্কের খাচা ভেংগে বাঘ বেরিয়ে যাওয়ার ঘটনায় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
সাফারি পার্কের একাধিক সূত্র জানিয়েছেন, ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্কের পৃথক বেষ্টনির মধ্যে দুটি বাঘ রয়েছে। প্রতিদিন বাঘ দেখতে হাজার হাজার পর্যটক ও দর্শনার্থীদের আগমন ঘটে এ পার্কে। বাঘ দেখার জন্য আসা দর্শনার্থীদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা রয়েছে। কিন্তু বাঘের খাচাটি একেবারে ঝুকিমুক্ত নয়। দীর্ঘদিন ধরে বাঘের খাচার কিছু অংশ ভেঙ্গে গেছে। কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে খাঁচাটি মেরামত করেনি। খাঁচার ভাঙ্গা অংশ দিয়ে প্রায় সময় বাঘটি বাইরে চলে যাওয়ার জন্য চেষ্ঠা করছিলো। কিন্তু পার্ক কর্তৃপক্ষ খাঁচাটি মেরামত না করায় এ ধরণের ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে।
পার্কে কর্মরতদের একাধিক সুত্র থেকে জানা গেছে, গত ১৩ জানুয়ারী শনিবার রাতে কোন এক সময়ে বাঘটি খাঁচা ছিড়ে বাইরে বেরিয়ে যায়। এসময় রাতভর বাঘটি বেষ্টনিতে থেকে যায়। এরইমধ্যে গতকাল রবিবার সকাল দশটার দিকে পাশ্ববর্তী এক কাঠুরিয়া ও তার দুই ছেলেকে নিয়ে পার্কের বাউন্ডারিতে ঢুকে লাকড়ি কুড়াতে যায়। হঠাৎ করে কাঠুরিয়া বাঘটি দেখে ফেলে। তখন সে চিৎকার দিয়ে গাছের মধ্যে উঠে যায়। তার অপর দুই ছেলে মুহুর্তের মধ্যে জঙ্গলের মধ্যে লুকিয়ে থাকেন।
তারা কৌশলে প্রাণে রক্ষা পেলেও বাঘটি বাচ্ছাদের অবস্থান জানতে না পারায় বড় ধরনের দূর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়ে গেছে। একপর্যায়ে বাঘটি অন্যদিকে চলে যায়। কাঠুরিয়া সেখান থেকে এসে কর্র্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানোর পর বাঘটি খাঁচার মধ্যে ঢুকাতে তারা তৎপর হয়ে উঠে। গতকাল ১৪ জানুয়ারী সকাল থেকে আজ ১৫ জানুয়ারী রাত সাড়ে ৮টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বাঘটিকে এখনো পর্যন্ত খাঁচায় প্রবেশ করাতে পারেনি। ফলে পার্কে আসা দেশী-বিদেশী পর্যটক-স্থানীয়দের মধ্যে বাঘ আতংক বিরাজ করছে। গত ২দিন ধরে বাঘ আতংকের কারণে পার্কে আসা দর্শনার্থীদের সংখ্যা কমে গেছে।
আরও জানান, পার্কের প্রায় ৫০ একর বিশিষ্ট্য বেষ্টনিতে বাঘটি খাদ্যের সন্ধানে ঘুরাঘুরি করছিলো। গতকাল রবিবার ও আজ সোমবার ২দিন-রাত পর্যন্ত চেষ্টা করে পার্ক কর্তৃপক্ষ বাঘটিকে খাঁচার মধ্যে ঢুকাতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে যাচ্ছেন। ঘটনার পর থেকে খাঁচার মধ্যে মাংস রাখা হয়েছে। কোন এক সময়ে বাঘের ক্ষুধা দেখা দিলে খাঁচার মধ্যে আসার কথা জানিয়েছেন পার্ক কতৃপক্ষ।
এদিকে বাঘটি খাঁচা থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে দেশ-বিদেশের পর্যটকসহ স্থানীয় এলাকাবাসী। বিশেষ করে ডুলাহাজারা ইউনিয়নের বাগানপাড়া, কৈয়ারঢেবা ও পূর্ব মাইজপাড়ার শতশত পরিবারের লোকজন ভয়ে চরম আতংকের মধ্যে রয়েছেন। এদিকে বাঘটি বেষ্টনিতে চলে আসার বিষয়টি জানার জন্য পার্কের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোর্শেদ ও বিট কর্মকর্তা মাজাহারের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করেও রিসিভ না করায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন ও স্থানীয় লোকজন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তবে আজ ১৫জানুয়ারী রাত সাড়ে ৮টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বাঘটিকে এখনো পর্যন্ত খাঁচায় ঢুকাতে পারেনি।
পাঠকের মতামত: